হঠাৎ করেই বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ ঝিনাইদহ শহরের পৌর এলাকায়। দেড় শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছে গত ২ দিনে জেলা সদর হাসপাতালে । হাসপাতালে শয্যা না পেয়ে মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের।
সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য মতে, গত বুধবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৬০ জন রোগী। আর বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ১১০ জন। যাদের অধিকাংশ রোগীর বাড়ি শহরের হামদহ, কাঞ্চনপুর, মোল্লাপাড়া এলাকায়।
(৫ নভেম্বর) শুক্রবার সকালে সদর হাসপাতালের মেডিসিনি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, বেড কিংবা মেঝেতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। ভর্তি রোগীর পাশাপাশি প্রতিনিয়ত আসছে ডায়রিয়ার আক্রান্ত নতুন রোগী। আক্রান্তদের বেশিরভাগই নারী ও বয়স্ক।
আলহেরা পাড়া এলাকার জুয়েল নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, আমাদের পরিবারে ৩ জন অসুস্থ। পরশুদিন রাতে ভর্তি করেছি। আমার বোন সুস্থ হয়েছে তবে বোনের বাচ্চা এখনো সুস্থ হয়নি। কয়দিন থাকা লাগবে তা বুঝতে পারছি না।
খন্দকারপাড়া এলাকার চৈতি নামের এক রোগী বলেন, স্যালাইনগুলো আমাদের বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। ওষুধও আমরা অনেক সময় পাচ্ছি না। নার্সরাও সেবা দিতে পারছে না ঠিকমতো।
সোনালী নামের এক রোগী বলেন, হঠাৎ করে আমার মেয়ের পাতলা পায়খানা হয়েছে। তারপর আমার হাসবেন্ডের এরপর আমার হয়েছে। কিসের জন্য হলো জানি না।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার বলেন, ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে যারা আসছেন তারা বয়স্ক। শিশুরা কম আক্রান্ত হচ্ছে। পৌরসভার একটি এলাকা থেকে রোগী বেশি আসছে। বেশি সংখ্যক রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। যেহেতু আমাদের জনবল কম। তারপরও আমরা সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করছি তাদের সেবা দিতে।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. জাকির হোসেন বলেন, রোগীরা বেশির ভাগই একটি নির্দিষ্ট এলাকার। এতে আমরা ধারণা করছি কোনো খাবার অথবা পানির মাধ্যমে এটি ছড়িয়েছে। যারা আক্রান্ত হয়নি তাদের প্রতি আমাদের পরামর্শ তারা যেন পরিষ্কার বিশুদ্ধ পানি পান করেন এবং হাত ধৌত করেন। সেই সাথে বাসিপচা খাবার এড়িয়ে চলেন।
হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. হারুন-অর-রশিদ বলেন, শিশু ডায়রিয়া আগের মতই আছে, বয়স্ক মানুষের ডায়রিয়া হঠাৎ করে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা সব জায়গা যোগাযোগ করেছি। আমাদের ওষুধ, স্যালাইন পর্যাপ্ত আছে। আমরা আশা করছি এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারব।