বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে যদি দলের কেউ স্বতন্ত্রভাবে অংশ নিতে চান, সেখানে কোনো বাধা থাকবে না। এটা দলীয় সিদ্ধান্ত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরের কালিবাড়ি এলাকার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘জাতীয় কর্মসূচির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমরা বলেছি, নির্বাচন কমিশন নিয়ে আমাদের খুব একটা আগ্রহ নেই। এই সরকারের হাতে পড়ে বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থাটাই এখন পুরোপুরি বিনষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে যেটা দেখেছি, নির্বাচনকালে যদি নিরপেক্ষ সরকার না থাকে, তাহলে নির্বাচন কমিশন কোনো কিছুই করতে পারে না। সে কারণে বিগত দিনগুলোর সব অভিজ্ঞতা নিয়ে আমরা নির্বাচন বর্জন করেছি, নির্বাচনও করেছি। নির্বাচন কমিশন গঠনের সময় মতামত দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এই সরকার কোনো কিছুই গ্রহণ করে না। তারা তাদের মতো করে নির্বাচন করার জন্য সবকিছু সাজিয়ে নেয়।’
ইউপি নির্বাচনে দল অংশ না নিলেও তৃণমূল বিএনপির নেতারা স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন—এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান খুব পরিষ্কার। আমরা প্রথম থেকেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলগতভাবে অনুষ্ঠানের বিপক্ষে ছিলাম। আমরা বলেছিলাম, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেওয়া সঠিক হবে না। এটা ইতিমধ্যে প্রমাণিত হতে শুরু করেছে। আওয়ামী লীগই এখন দলীয় মার্কা বাদ দিয়ে নির্বাচন করার চিন্তাভাবনা করছে। স্থানীয় পর্যায়ে দলীয় মার্কায় নির্বাচন করতে গেলে গ্রামীণ সমাজ পুরোপুরিভাবে বিভক্ত হয়ে যায়। সে কারণে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে অংশ নেব না। দলের কেউ স্বতন্ত্রভাবে অংশ নিতে চাইলে বাধা থাকবে না।’
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হকের দল গঠন প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নতুন কোনো রাজনৈতিক দল যখন গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলে, সেটাকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা মনে করি, এই অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে তারা ভূমিকা রাখবে এবং গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠার জন্য তারা কাজ করবে।’
জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন বিএনপির রাজনীতিতে নেই—আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেবের উচিত আয়নায় তাঁর নিজের চেহারা দেখা। একই সঙ্গে জনগণের চোখের ভাষা তাঁর পড়া উচিত। তারা সম্পূর্ণভাবে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে আগের রাতে নির্বাচন করে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে।’
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা তো সরকারই ঘটিয়েছে। এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে। রংপুরে হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের ছেলেরাই ধরা পড়েছে। আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরেই কুমিল্লায় ওই ঘটনা ঘটেছে। পরবর্তীকালে সরকার জোর করে অন্যের ঘাড়ে এসব ঘটনার দায় চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।’
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন ও সহসভাপতি নুর করিমসহ নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।