রাজধানীর বনানী থানায় মাদক মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা চার্জশিট আমলে নেওয়ার দিন ধার্য আজ। (২৬ অক্টোবর) মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত এ চার্জশিট আমলে নেওয়ার কথা রয়েছে।
আদালতে হাজির হবেন পরীমনি সকাল ১০টার মধ্যে । এমনটাই জানিয়েছেন তার আইনজীবী নীলঞ্জনা রিফাত। গত ১৩ অক্টোবর একই আদালতের বিচারক চার্জশিট আমলে নেওয়ার জন্য ২৬ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
নিজের ফেসবুকে ছবিও শেয়ার করেছেন এ নায়িকা। সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে আদালতে হাজির হয়েছেন এ নায়িকা। আদালতে হাজিরা দেওয়ার জন্য সকালে আনুমানিক ৯টার দিকে আদালতের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন পরীমনি।
এর আগে ১০ অক্টোবর ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার মামলার চার্জশিট গ্রহণ করেন। এরপর আদালত মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন।
ওই দিন পরীমনির আইনজীবী তার স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেন। এছাড়া মামলার দুই আসামি আশরাফুল ইসলাম দীপু ও কবির হোসেনেরও জামিন মঞ্জুর করা হয়।
গত ৪ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী মোস্তফা কামাল আদালতে পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার অপর দুই আসামি হলেন- আশরাফুল ইসলাম দিপু ও কবির হোসেন।
তার আগে গত ৩১ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে প্রতিবেদন দাখিল হওয়া পর্যন্ত পরীমনির জামিন মঞ্জুর করেন। পরদিন গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে মুক্ত হন এ চিত্রনায়িকা।
গত ৪ আগস্ট পরীমনির বনানীর বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। এসময় তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দামি মদ, মদের বোতলসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য জব্দের দাবি করে র্যাব। ওই দিন রাতে বনানীর বাসা থেকে পরীমনিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরে তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদক মামলা করা হয়। ওই মামলায় গত ৫ আগস্ট পরীমনিকে চারদিন ও ১০ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় দু‘দিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত।
পরে ১৩ আগস্ট পরীমনির জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ধীমান চন্দ্র মণ্ডল। আদালতের আদেশে পরীমনিকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর ওই কারাগার থেকে গত ১৯ আগস্ট তৃতীয় দফায় পরীমনিকে একদিনের রিমান্ডে ঢাকায় নেওয়া হয়। রিমান্ড শেষে ২১ আগস্ট পুনরায় পরীমনিকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় পরীমনির বাসা থেকে জব্দ করা হয় ১৬টি আলামত। মধ্যে রয়েছে- হ্যারিয়ার গাড়ি, দুটি ল্যাপটপ, তিনটি আইফোন, একটি আইপ্যাড, মেমরি কার্ড একটি, পেনড্রাইভ একটি, টেলিটক মডেম একটি, মাই স্টাইক একটি, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ভিসাকার্ড একটি, ব্র্যাক ব্যাংকের গোল্ডকার্ড একটি, ব্র্যাক ব্যাংকের ভিসাকার্ড একটি ও দুটি পাসপোর্ট।
এর আগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী মোস্তফা কামাল দুটি জব্দ তালিকার মোট ১৬টি আলামত পরীমনিকে ফেরত দেওয়ার সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, পরীমনি ২০১৬ সাল থেকে মাদকসেবন করতেন। এমনকি ভয়ংকর মাদক এলএসডি ও আইসও সেবন করতেন। এজন্য বাসায় একটি ‘মিনিবার‘ তৈরি করেন। সেখানে নিয়মিত ‘মদের পার্টি’ করতেন। চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজসহ আরও অনেকে তার বাসায় অ্যালকোহলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকের সরবরাহ করতেন ও পার্টিতে অংশ নিতেন।