সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের ক্ষমতা বাড়ানোর সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে এমন সিদ্ধান্তের জন্য বিজেপি সরকারের তীব্র সমালোচনাও করেন তিনি।
সম্প্রতি সীমান্ত সুরক্ষার বিষয়টিকে সামনে এনে চলতি মাসের ১৫ তারিখ পশ্চিমবঙ্গ, আসাম এবং পাঞ্জাব সীমান্তে বিএসএফের কার্যক্ষেত্র বাড়ানো হয়। এখন থেকে ১৫ কিলোমিটারের পরিবর্তে সীমান্তের ৫০ কিলোমিটার এলাকায় নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন তারা।
প্রায় সাড়ে চার হাজার বর্গ কিলোমটার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের পরিমাণ ।এরমধ্যে এক হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা পানির নিচে হলেও, বাকি সীমান্তের প্রায় ৮০ শতাংশই কাঁটাতারের বেড়া। যদিও এর মধ্যে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার এলাকায় এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের বেড়া দেয়নি পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
এছাড়াও দুই দেশের সীমান্তে বড় সমস্যা হচ্ছে মাদক ও অস্ত্র পাচার। আগের তুলনায় মানব-পাচার কিছুটা কমলেও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি গরুপাচার। এ নিয়ে বরাবরই পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করে আসছে প্রতিবেশী দুই দেশ।
ঠিক এমন বাস্তবতায় অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাড়াতে চলতি মাসের ১৫ তারিখ থেকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের কার্যক্ষমতা আরও বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এতদিন পশ্চিমবঙ্গ, আসাম এবং পাকিস্তান লাগোয়া পাঞ্জাব সীমান্তের ১৫ কিলোমিটার এলাকায় নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকলেও, এখন থেকে সীমান্তের ৫০ কিলোমিটার এলাকায় নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে বিএএফ। চালাতে পারবে গ্রেপ্তার ও তল্লাশি অভিযানও।
কেন্দ্রীয় সরকারের এমন সিদ্ধান্তে এরইমধ্যে শুরু হয়েছে রাজ্য-কেন্দ্র সংঘাত। তিন দিনের সফরে উত্তরবঙ্গ গিয়ে রোববার রাতে বিজেপি সরকারকে তুলোধুনা করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও সীমান্তে মাদক ও গরুপাচারসহ সবধরনের অমূলক কাজের পেছনে তৃণমূলের সিন্ডিকেট রয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি শীর্ষ নেতা দিলীপ ঘোষও।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিএসএফের হাতে ছিল ১৫ কিলোমিটার, এখন তারা ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত ঘুরে বেড়াতে পারবে। এর মানে টা কী? এতে করে দাঙা লাগানোর জন্য উস্কানি দেওয়া হচ্ছে।
বিজেপির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, সবচেয়ে বড় উত্তেজনাকর সীমান্ত হচ্ছে বাংলাদেশ-বাংলা (পশ্চিমবঙ্গ) সীমান্ত। গরু-পাচার, সোনা পাচার, চোরাচালানে সব নেতারা যুক্ত রয়েছে, পুলিশ যুক্ত রয়েছে। স্থানীয় মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত হয়ে যাচ্ছে।
চলতি বছরের বিধানসভা নির্বাচনে মমতার দলের কাছে বড় ধাক্কা খায় গেরুয়া শিবির। এরপর থেকেই রাজ্য আর কেন্দ্রের মধ্যে নানা ইস্যুতে শুরু হয় সংঘাত। বিশেষ করে ২০২৪ সালের মোদিবিরোধী মুখ হিসেবে মমতার নাম ওঠে আসায় এই সংঘাত আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।