বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, দৈনিক ৭০০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ আমদানি করতে দুই মাসের মধ্যে নেপালের সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নয়নে ধীরগতির কথা স্বীকার করলেও এর দায় চাপালেন কোভিড পরিস্থিতির ওপর। তবে এ সমস্যা শিগগিরই কাটিয়ে ওঠার আশ্বাস দিলেন তিনি।
২০১৩ সালে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির মধ্য দিয়ে শুরু হয় বাংলাদেশের আন্তঃদেশীয় বিদ্যুৎ কূটনীতি। এরপর নেপাল ও ভুটান থেকে পানিবিদ্যুৎ আনতে কয়েক বছরের আলোচনার পর সমঝোতা হলেও এখনও তা বাস্তবে রূপ নেয়নি।
তবে (২৩ অক্টোবর) শনিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী জানালেন, মাস দু’য়েকের মধ্যেই হতে যাচ্ছে নেপালের সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি। দিনে বিদ্যুৎ মিলবে ৭০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত।
বলেন, আমাদের পিজিসিবি’র কয়েকটা বিষয় আছে, সেগুলো হয়ে গেলে আশা করি আগামী এক থেকে দুই মাসের মধ্যেই এই চুক্তি সম্পন্ন হবে।
এদিকে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের সঙ্গে সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নতি কতটা তাল মিলিয়ে চলছে, তা নিয়ে প্রশ্ন ছিল শুরু থেকেই। মেগা প্রকল্প এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র পুরোপুরি প্রস্তুত থাকলেও সক্ষমতার অর্ধেক বিদ্যুৎ মিলছে কেবল সঞ্চালন সীমাবদ্ধতার কারণে।
অন্যদিকে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎপ্রকল্পের কাজ এগিয়ে চললেও ভাবাচ্ছে সঞ্চালন লাইন। সঞ্চালন ব্যবস্থার অগ্রগতিতে ধীরগতির কথা স্বীকার করলেও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আশ্বস্ত করলেন, শিগগিরই কাটবে সব সীমাবদ্ধতা।
নসরুল হামিদ বলেন, কোভিডের কারণে কিছুটা সমস্যা তো হয়েছেই। তবে আশা করি, সেটা কাটিয়ে উঠার জন্য আগামী বছরের মধ্যেই ট্রান্সমিশন লাইনগুলো তৈরি করে ফেলা সম্ভব হবে, বিশেষ করে পায়রারটা। এছাড়া, কাজের অগ্রগতি অনুযায়ী, ভবিষ্যতে রূপপুর নিয়ে তেমন একটা সমস্যা হবে বলে মনে হচ্ছে না।
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নতি নিয়ে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান পাওয়ার গ্রিড করপোরেশন অব ইন্ডিয়ার গতানুনিক নানা সুপারিশ অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয়। তবে নেপাল-ভুটান-মিয়ানমারের সঙ্গে আন্তঃদেশীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালনের কথা নীতিনির্ধারণী মহলের আলোচনায় থাকলেও তা উপেক্ষিতই ছিল ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের গবেষণায়। গুরুত্ব পায়নি রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ও।
যদিও এটি প্রাথমিক পর্যায়ের গবেষণা জানিয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বললেন, আরও বেশ গবেষণার ওপর ভিত্তি করেই দুই বছরের চূড়ান্ত হবে সমন্বিত বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা।