কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরীফ রাখার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ইকবাল হোসেনকে কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে নেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, শুধু নানুয়ারদীঘির পাড়ের মন্দিরেই নয়, আরও একটি মন্দিরের ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন ইকবাল।
পুলিশের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে একটি সংবাদমাধ্যম এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
তদন্ত সূত্র বলছে, ইকবাল হোসেন নানুয়ারদীঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে শুরুতে ঢুকতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। পূজামণ্ডপটিতে শুরুতে ইকবাল লোকজন দেখে মিশন সফল না করে ফিরে আসেন।
এরপর তিনি গিয়েছিলেন ওই মণ্ডপের অদূরে দিগম্বরীতলার গুপ্ত জগন্নাথ মন্দিরে। সেখানে গেটের তালা ভাঙতে ব্যর্থ হন ইকবাল। এরপর আবার ফিরে আসেন নানুয়ারদীঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে। সেখানে ওই সময় লোকজন না থাকার সুযোগ নিয়ে তিনি কোরআন শরিফ রেখে যান।
এদিকে কক্সবাজারে গ্রেপ্তার হওয়ার পর শুক্রবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে কুমিল্লা পুলিশ লাইন্সে এসে পৌঁছায় তাকে বহনকারী মাইক্রোবাস। এর আগে তাকে নিয়ে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে কক্সবাজার থেকে কুমিল্লার পথে রওনা হয় পুলিশ।
এর আগে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর শুক্রবার ভোরে অভিযুক্ত ইকবালকে নিয়ে কুমিল্লার উদ্দেশে রওনা দেয় পুলিশের একটি দল।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভোর ৫টার দিকে কুমিল্লা থেকে পুলিশের একটি টিম কক্সবাজার পৌঁছায়। প্রাথমিক আইনি কার্যক্রম শেষে আটক ব্যক্তিকে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর সাড়ে ৬টার দিকে কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও কুমিল্লা পুলিশের নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে কুমিল্লায় পাঠানো হয়।’
তবে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে ইকবাল কী তথ্য দিয়েছেন সে বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
এদিকে অভিযানে থাকা একজন পুলিশ জানান, সৈকতের বালিয়াড়িতে ঘোরাফেরা করছিলেন ইকবাল সন্দেহে আটক ওই ব্যক্তি। পরে তাকে সৈকত থেকে আটক করে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে সে কোনো হোটেলে ওঠেনি।
উল্লেখ্য, শারদীয় দুর্গাপূজার মহাষ্টমীর দিন গত বুধবার (১৩ অক্টোবর) ভোরে কুমিল্লা শহরের নানুয়াদিঘির উত্তরপাড়ে দর্পণ সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত অস্থায়ী পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন দেখা যায়। এরপর কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে ওই মণ্ডপে হামলা চালায় একদল লোক। সেখানে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।
ওই ঘটনায় প্রাপ্ত সিসিটিভি ফুটেজে ইকবাল নামের এক ব্যক্তিকে দেখা যায়। সিসিটিভির সে ফুটেজে দেখা যায়, অভিযুক্ত ইকবাল হোসেন কীভাবে, কখন মসজিদে যান এবং বের হন। এরপর মণ্ডপের দিকে যান এবং মণ্ডপ থেকে গদা হাতে ফেরেন তা ফুটেজে অনেকটা স্পষ্ট।