মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৪:১০ পূর্বাহ্ন

বাদী বলছেন, আসামি বিএনপি নেতাদের নাম দিয়েছেন আ.লীগ নেতা

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২১
  • ৮ Time View

বিএনপি নেতাদের আসামি করা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে বরিশালের গৌরনদীতে মন্দিরে হামলার ঘটনায় করা মামলায় । মামলায় নাম উল্লেখ করা আসামিদের মধ্যে বিএনপির অন্তত তিনজন নেতার নাম এসেছে।বাদী এ ব্যাপারে বলেছেন, মামলার আসামিদের ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাঁকে দিয়ে মামলার কাগজে সই করিয়েছেন।

উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের ধুরিয়াইল শ্রীশ্রী কাজীরপাড় সর্বজনীন দুর্গামন্দিরে হামলার ঘটনায় মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুভাষ বৈদ্য বাদী হয়ে গত শনিবার মামলা করেন। মামলাটি হয়েছে গৌরনদী মডেল থানায়। মামলায় ২২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৬০ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে বরিশাল কারাগারে পাঠিয়েছে।

মামলার আসামিদের মধ্যে আছেন যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ও বরিশাল-১ আসনের সাবেক সাংসদ জহীর উদ্দিনের একান্ত সচিব মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে কাজল (৪০), উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ব্যবসায়ী মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে শাহীন হাওলাদার (৪২), আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান জামিল (৪৬) এবং যুবদল কর্মী সোহেল সিকদার (২৫), সবুজ ঢালীসহ (২৮) কয়েকজন।

রফিকুল ইসলাম ওরফে কাজল অভিযোগ করেন, মন্দিরে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশে হয়রানি করতে তাঁকেসহ বিএনপির নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত সব আসামি বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় নেতা-কর্মী বলে তাঁর দাবি।
গৌরনদী উপজেলা বিএনপির নেতা রফিকুল ইসলাম ওরফে শাহীন হাওলাদার অভিযোগ করেন, ‘আমি ঢাকায় থাকি। খুব একটা বাড়িতে যাই না। অথচ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে আমাকেসহ দলের নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়েছে।’

বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে মামলা করার বিষয়ে বাদী সুভাষ বৈদ্য বলেন, ‘হামলার সময় আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। আমি মামলার আসামিদের সম্পর্কে কিছু জানি না বা চিনি না। বার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বার্থী ইউপির চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক হাওলাদার আমাকে ধরে থানায় নিয়ে জোর করে কাগজে সই নিয়ে মামলা করেছেন। আমি এখন আতঙ্কে আছি।’

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে আবদুর রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, ‘বাদী সুভাষ বৈদ্য স্বেচ্ছায় ও স্বপ্রণোদিত হয়ে থানায় উপস্থিত হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এখন হয়তো হুমকির মুখে তা অস্বীকার করে থাকতে পারেন।’
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেন বলেন, বাদীর সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা মনোজ গোমস্তা বলেন, মন্দিরে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের আড়াল করে নিরীহ ব্যক্তিদের হয়রানি করা হলে সেটা হবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে প্রতিহিংসার মুখে ঠেলে দেওয়ার সামিল। অকারণে কাউকে হয়রানি না করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ধানডোবা বাজার কমিটির সভাপতি মো. শাহজাহান হাওলাদার ওরফে খোকন।

বিএনপির নেতা জহির উদ্দিনের অভিযোগ, আইনকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নির্যাতন করছে সরকার। বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা এরই প্রমাণ।

তবে বিএনপির বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এইচ এম জয়নাল আবেদীন বলেন, অতীতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের ইতিহাস বিএনপির রয়েছে। ২০০১ সালে গৌরনদী-আগৈলঝাড়ায় সংখ্যালঘু নির্যাতিন ছিল সারা বিশ্বে আলোচিত ঘটনা। গৌরনদীসহ দেশব্যাপী সংখ্যালঘু নির্যাতনের মদদদাতা বিএনপি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 Jagoroni TV
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com