গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ১৭২ জন ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে রাজধানী ঢাকার হাসপাতালে ১৩০ জন এবং ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ৪২ জন রোগী ভর্তি হন।
সবমিলিয়ে বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ভর্তি থাকা রোগীর সংখ্যা ৮১৫ জন। চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট মৃতের সংখ্যা ৮৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে হাসপাতলে সর্বমোট ভর্তি থাকা ৮১৫ জনের মধ্যে রাজধানী ঢাকার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে রয়েছেন ৬৩০ জন ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৮৫ জন।
সোমবার (১৮ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ কামরুল কিবরিয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ভর্তি হওয়া ১৭২ জন রোগীর মধ্য রাজধানী ঢাকায় সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালে ৫০ জন ও বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ৮০ জন ভর্তি হন। এছাড়া ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিভাগে ৪২ জন ভর্তি হন।
১ জানুয়ারি থেকে সোমবার (১৮ অক্টোবর) পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২১ হাজার ৫৭৪ জন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২০ হাজার ৬৭৬ জন।
এই ২১ হাজার ৫৭৪ জনের মধ্যে জানুয়ারিতে ৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৯ জন, মার্চে ১৩ জন, এপ্রিলে তিনজন, মে মাসে ৪৩ জন, জুনে ২৭২ জন, জুলাইয়ে ২ হাজার ২৮৬ জন, আগস্টে ৭ হাজার ৬৯৮ জন, সেপ্টেম্বরে ৭ হাজার ৮৪১ জন এবং ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ৩ হাজার ৩৭৭ জন রোগী ভর্তি হন।
এছাড়া চলতি বছর মারা যাওয়া ৮৩ জনের মধ্যে জুলাই মাসে ১২ জন, আগস্টে ৩৪ জন, সেপ্টেম্বরে ২৩ জন এবং ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যু হয়।
প্রতিবছর বর্ষাকালেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোতে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ দেখা দেয়। ২০১৯ সালে দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়েছিল।
ডেঙ্গু প্রকোপের এ সময়ে বাসাবাড়িতে অব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্রে পানি জমতে না দেওয়াসহ দিনে ও রাতে মশারি টানানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেজ্ঞরা।
দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৩০০ মানুষ প্রাণ হারান। তবে সরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা ১৭৯।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, ওই বছর সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন।
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণসমূহ:
১। প্রচণ্ড জ্বর
২। তীব্র মাথাব্যথা
৩। বমি
৪। শরীরে লাল র্যাশ ওঠা
৫। মাংসপেশীতে ব্যথা
৬। চোখের পেছনে ব্যথা
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়:
১। মশার প্রজনন স্থল ধ্বংস করা।
২। ঘর ও আশপাশের যে কোনো পাত্রে বা জায়গায় জমে থাকা পানি পরিষ্কার করা যাতে এডিস মশার লাভা বিস্তার না করতে পারে।
৩। ফুলের টব, প্লাস্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের ড্রাম, মাটির পাত্র, বালতি, টিনের কৌটা, ডাবের খোসা, নারকেলের মালা, কনটেইনার, মটকা, ব্যাটারি সেল ইত্যাদি প্রতিনিয়ত পরিষ্কার করা; যাতে এডিস মশা বিস্তার না করতে পারে।
৪। রাতে বা দিনে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করা।
৫। স্বাস্থ্যকর পরিবেশ স্থাপন করা।
৬। মশা নিধনের ওষুধ, স্প্রে কিংবা কয়েল ব্যবহার করা।
৭। জানালাতে মশা প্রতিরোধক নেট ব্যবহার করা।