রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:৩৮ অপরাহ্ন

করোনাকালে অধিকহারে হচ্ছে বাল্যবিয়ে: স্কুল খুললেও ফেরেনি ওরা

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২১
  • ৮ Time View

সারাদেশে করোনা মহামারির দেড় বছরে খুলনা জেলায় তিন হাজারের বেশি স্কুল ছাত্রীর বাল্যবিবাহ হয়েছে। যাদের বেশির ভাগই এখন আর স্কুলে আসছে না। আইনের তোয়াক্কা না করে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন ও বয়স বাড়িয়ে এসব বিয়ে হয়ে থাকে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় বাল্যবিয়ে রোধে আইন আরও কঠোর হওয়া উচিত বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরা।

জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, করোনাকালীন স্কুল বন্ধের সময় সপ্তম থেকে দশম শ্রেণির তিন হাজারেরও বেশি ছাত্রীর বাল্যবিয়ে হয়েছে। সর্বাধিক ৭৫১টি বাল্যবিয়ে হয়েছে ডুমুরিয়া উপজেলায়। আর এক স্কুলে সবচেয়ে বেশি রূপসার বেলফুলিয়া ইসলামিয়া স্কুলের ৭০ জনের।

খুলনার রূপসা উপজেলার বেলফুলিয়া ইসলামিয়া স্কুলের নবম শ্রেণিতে এখন ছাত্রীর সংখ্যা ১২২ জন। এর মধ্যে ৯ জনেরই বিয়ে হয়ে গেছে। এদের সঙ্গেই ক্লাসে মনোযোগী হতে পারত তারাও। এসব শিক্ষার্থী এখন বধূ হয়ে সংসার সামলাতে ব্যস্ত।

এ ছাড়া কয়রাতে ৬৮১টি, পাইকগাছায় ৪৮৩টি, ফুলতলায় ২৪০টি, মহানগরীতে ১৫৮টি স্কুলশিক্ষার্থীর বাল্যবিয়ে হয়েছে গেছে। এদের অধিকাংশই এখন আর স্কুলে আসছেন না।

স্কুলের সহপাঠীরা জানান, অনেকের বিয়ে হয়ে গেছে। করোনাকালে বাল্যবিয়ে হওয়ায় পরিবার থেকে স্কুলে পাঠানো হচ্ছে না। এ ধরনের বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানাচ্ছি। তাদের বিয়ে করার ইচ্ছা ছিল না, পড়াশোনা করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু পরিবারের চাপের মুখে বিয়েতে বাধ্য হয়েছে।

বিয়ে হয়ে গেলেও সেসব শিক্ষার্থীকে স্কুলে ফেরানোর চেষ্টা করছেন শিক্ষকরা। রূপসা বেলফুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম জানান, বাল্যবিয়ের শিকার শিক্ষার্থীদের পরিবারকে জানিয়েছে, ছাত্রীদের স্কুলে বিনা বেতনে পড়াব। শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠায়ে দিন। তারপর কিছু ছাত্রী স্কুল আসতে শুরু করেছে। তারা নিয়মিত ক্লাস করছে।

বাল্যবিয়ের জন্য নিজেদের দায় অস্বীকার করে নোটারি পাবলিকের সুযোগ থাকাকেই এ জন্য দায়ী করছেন বিবাহ রেজিস্টাররা।

খুলনা মুসলিম নিকাহ রেজিস্টার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাকারিয়া আকন্দ জানান, বাল্যবিয়ের জন্য আমাদের বিবাহ রেজিস্টাররা দায়ী নয়। আমাদের কাজ লিপিবদ্ধ ও সংরক্ষণ করা। কিন্তু নোটারি পাবলিক কিংবা হলফনামা যারা করছেন, তাদের কিন্তু সংরক্ষণ করার সুযোগ নেই। এফিডেভিট যেদিন বন্ধ হবে, সেদিন বাল্যবিয়ে এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে।

বাল্যবিয়ের আইন আরও কঠোর হওয়া উচিত বলে মনে করেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির। তিনি জানান, একজন শিক্ষার্থী যখন স্কুলে পড়ে, তখন তার বয়স কখনোই ১৮ হতে পারে না। সেখানে নোটারি পাবলিক যদি বলেও এটা কখনোই সম্ভব হবে না। ফলে আগে থেকে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে এবং অভিভাবকদের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

বাংলাদেশে সরকারি আইন অনুযায়ী মেয়েদের সর্বনিম্ন বিয়ের বয়স ১৮ এবং ছেলেদের সর্বনিম্ন ২১ বছর।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 Jagoroni TV
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com