ইংল্যান্ড-ভারতের মধ্যকার সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্ট মাঠে গড়ায়নি কোভিডের শঙ্কায়। এই ম্যাচ বাতিল হলে ২০০৭ সালের পর প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জয়ের রেকর্ড গড়বে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা ভারত। তবে ম্যানচেস্টার টেস্ট বাতিলের পেছনে আসল কারণ কি শুধুই করোনা? নাকি কদিন পরে শুরু হতে যাওয়া ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)? এমন প্রশ্নে সন্দেহের তীরে বিদ্ধ হচ্ছেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা।
ভারতীয় ক্রিকেট সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী অবশ্য দাবি করেছিলেন, দলের সাপোর্ট স্টাফ করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় আতঙ্কিত হয়েই কোহলিরা ম্যানচেস্টার টেস্ট খেলতে চাননি। তবে সেই যুক্তি ধোপে টিকছে না। টেস্ট বাতিলের জন্য দায়ী করা হচ্ছে আইপিএলকে। অভিযোগের আঙুল তুলছেন সাবেক ইংলিশ ক্রিকেটার-ধারাভাষ্যকাররা। এই অভিযোগ আরও তীব্র হয়েছে টেস্ট বাতিলের পরপরই ভারতীয় ক্রিকেটারদের ইংল্যান্ড ত্যাগের কারণে।
আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের কারণে কোনো দল যদি শেষ পর্যন্ত একাদশ গঠনে অসমর্থ হয়, তাহলে সেটা ‘পরিত্যক্ত’ ঘোষণা করা হবে। তবে এখানে প্রশ্ন রয়েছে। সাপোর্ট স্টাফ করোনাক্রান্ত হলেও ভারতীয় দলের সবারই করোনা নেগেটিভ এসেছিল। তাই তাদের খেলতে অস্বীকৃতি জানানোর ভিত্তিটা অবশ্যই করোনাভাইরাস নয়। সেক্ষেত্রে সম্ভাব্য কারণ হতে পারে আইপিএল। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া এই ফ্র্যাঞ্জাইজি লিগে অংশ নিতেই ‘করোনার অজুহাত’ দাঁড় করিয়েছেন কোহলিরা। মাইকেল ভনের পর এমন অভিযোগ তুলেছেন সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক ও ধারাভাষ্যকার ডেভিড গাওয়ারও।
গাওয়ারের অভিযোগ, ম্যানচেস্টার টেস্টের আগে মধ্যরাতে কোহলি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে একটা ই-মেইল পাঠিয়েছিলেন। তিনি সরাসরি না বললেও ইঙ্গিতে এটাই বলতে চেয়েছেন যে সে ইমেইলে নিশ্চয়ই ম্যানচেস্টার টেস্ট না খেলার বিষয়টি ছিল। গাওয়ার বলেছেন, ‘কোহলি আগের দিন মধ্যরাতে বিসিসিআইকে একটা ইমেইল পাঠিয়েছিলেন। পুরো বিষয়টি আরও স্পষ্ট হওয়া দরকার।’
আইপিএলে অংশ নিতে চার্টাড বিমানে আবু ধাবির উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ড ছেড়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। গাওয়ার যোগ করেন, ‘টেস্ট বাতিল হয়ে যাওয়ার পরদিনই ভারতীয় ক্রিকেটারদের দুবাই চলে যাওয়াটা সন্দেহ বাড়িয়েছে। আমি মনে করি এর মধ্যে আরও কিছু আছে, যেটি সামনে আসা প্রয়োজন। ক্রিকেটের স্বার্থেই এ ব্যাপারে স্বচ্ছতার প্রয়োজন। ক্রিকেটপ্রেমীদের এ ব্যাপারে জানার অধিকার আছে।’
করোনাভাইরাসের কারণে এ টেস্টটি যদি আইসিসি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে, তাহলে প্রায় ৪ কোটি পাউন্ড ক্ষতি হবে ইসিবির। বিমা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের কারণে স্থগিত কোনো ম্যাচে ক্ষতিপূরণের আওতায় পড়ে না ইসিবির। ইংলিশ পত্রিকা দ্য টেলিগ্রাফ বলছে, ম্যানচেস্টার টেস্টের ফল নিয়ে আইসিসির কাছে যাওয়ার খুব কাছাকাছি চলে গেছে ইসিবি। সে ক্ষেত্রে বিসিসিআইয়ের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে যাবে তারা।