পণ্যবাহী ট্রাকের সিরিয়ালের নামে ভারতের ঘোজাডাঙ্গা বন্দরের পার্কিংয়ে লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজির কারণে ভোমরা বন্দরে আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা।
সম্প্রতি ভোমরা বন্দরে উভয় দেশের সিএন্ডএফ এজেন্টদের যৌথসভায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানানো হলেও কোনো সমাধান হয়নি। জেলা প্রশাসন বলছে, অভিযোগ পাওয়ার পরই সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। খুব দ্রুত বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে।
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর, জেলা শহর থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে। বন্দরের বিপরীতে ভারতের ঘোজাডাঙ্গা কাস্টমস শুল্ক স্টেশন। ভোমরা বন্দর থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরে কলকাতা নগরী।
বন্দর প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই উভয় দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছিল। কিন্তু গত জুন মাস থেকে ভোমরা বন্দর এর বিপরীতে ঘোজাডাঙ্গা পার্কিং ইয়ার্ডগুলোতে শুরু হয় সিরিয়ালের নামে চাঁদাবাজি।
আমদানি পণ্যবাহী ট্রাক প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে ভোমরা বন্দরে ঢুকতে হচ্ছে। চাঁদা না দিলে সিরিয়ালের জন্য ভারতের ওপারেই ৩০ থেকে ৪০ দিন পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে আটকে থাকতে হয়। এতে কাঁচা পণ্য নষ্ট হচ্ছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
সিএন্ডএফ এজেন্ট বলেন, একটি কুচক্রীমহল তারা অবৈধ আয়ের জন্য এখানে একটি এমন করছে। এভাবে যদি আমাদের ক্ষতি হতে থাকে তাহলে আমরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হব।
সম্প্রতি উভয় দেশের সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যৌথসভায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানানো হয়।
সাতক্ষীরার ভোমরা সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আলহাজ আরাফাত হোসেন বলেন, এভাবে যদি অনিয়ম চলতে থাকে তাহলে ঘোজাডাঙ্গা ও ভোমরা স্থলবন্দরটিও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
সাতক্ষীরা ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী নওশাদ দিলওয়ার রাজু বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের জেলা প্রশাসক উনাকে অবহিত করা হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এটা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে বলা হয়েছে।
তবে ভারতীয় সিএন্ডএফ এজেন্ট নেতা চাঁদার বিষয়টি এড়িয়ে যান।
ভারতের ঘোজাডাঙ্গা সিএন্ডএফ কার্গো ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অচিন্ত কুমার ঘোষ বলেন, আমাদের কথা বলেন আমরা সে কথার উত্তর দেব। বাজারের কথার প্রশ্ন করলে সে প্রশ্নের উত্তর আমরা দিতে বাধ্য নই।
অভিযোগ পাওয়ার পর সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ন কবির বলেন, এ বিষয়ে আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছি। আমরা আশা করছি এ সমস্যার একটা সমধান আমরা করে আমাদের ভোমরা স্থলবন্দরকেন্দ্রিক ব্যবসায়ীদের ওদের হাত থেকে আমরা রক্ষা করব।
চলতি অর্থবছরে এক হাজার ১৩৭ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে গত দু’মাসে মাত্র ১০২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে বলে জানায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।