মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১২:৪০ অপরাহ্ন

সিনহা হত্যা মামলার সাক্ষীকে রোহিঙ্গা দাবি আসামিপক্ষের

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ১০ Time View

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ৫নং সাক্ষী হাফেজ মোহাম্মদ আমিনের সাক্ষ‍্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা চলে। মামলাটিতে এ নিয়ে পাঁচজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

আজ আদালত থেকে বেরিয়ে সাক্ষী হাফেজ মোহাম্মদকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত। তিনি বলেন, ‘সিনহা হত্যা মামলার ৫নং সাক্ষী হাফেজ মোহাম্মদ আমিন একজন মিয়ানমারের (রোহিঙ্গা) বাস্তুচ্যুত নাগরিক। ঘটনার সময় এই সাক্ষী মসজিদের ছাদ থেকে হত্যাকাণ্ডের সবকিছু দেখেছেন বলে আদালতকে যে তথ্য দিয়েছেন, তা সঠিক নয়। কারণ, তিনি যে মসজিদে চাকরি করেন, সেটার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নামও জানেন না। সুতরাং তার সাক্ষ্য দেওয়ার আইনগত কোনও অধিকার নেই।’

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ফরিদুল আলম বলেন, ‘মামলার ৫নং সাক্ষী আদালতকে যথার্থ বলেছেন, তিনি রোহিঙ্গা না, বাংলাদেশি নাগরিক। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য তিনি নিজ চোখে দেখেছেন। কারণ, সেদিন মাগরিবের নামাজের পর মসজিদের ছাদে উঠেছিলেন ঈদুল আজহার চাঁদ দেখার জন্য। এ সময় সাক্ষী হাফেজ মোহাম্মদ আমিন হত্যাকাণ্ডের সব ঘটনা দেখেছেন। তাকে রোহিঙ্গা বলার কোনও যুক্তি নেই। এটি মামলাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার আসামিপক্ষের কৌশল। তাই কেউ বিভ্রান্ত হবেন না।’

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘রোহিঙ্গা বলে কি তার চোখ নেই? তিনি প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশি। তিনি যে মসজিদে চাকরি করেন, সেই মসজিদে কোনও কমিটি নেই। তাই, মসজিদ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম জানার প্রশ্নই ওঠে না।’

এদিকে এ মামলার আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে কারাবিধি অনুযায়ী সব সুযোগ সুবিধা দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার সাক্ষ‍্যগ্রহণের সময় প্রদীপের আইনজীবী রানা দাশ গুপ্তের ডিভিশন চেয়ে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক এ আদেশ দেন। আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে যথাসময়ে বরখাস্ত ওসি প্রদীপসহ সব আসামিদের কড়া নিরাপত্তায় আদালতে আনে পুলিশ।

গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।

এ ঘটনায় সে সময় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র‌্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি এবং রামু থানায় আরেকটি মামলা করে। এরপর মেজর সিনহা হত্যার ছয় দিন পর লিয়াকত আলী ও ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টে ঘটনার সময় দায়িত্ব পালনকারী আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। গত ২৪ জুন মামলার অন্য পলাতক আসামি টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

আসামিদের মধ্যে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া অন্য ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তদন্ত শেষে গত বছর ১৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন র‌্যাব ১৫-এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 Jagoroni TV
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com