কোভিড মহামারি কখোন একা জয় করা যায় না। বিশ্বের কোনো প্রান্তে এটি থেকে গেলে তা অন্যপ্রান্তে ছড়াতে বাধ্য। তবুও টনক নড়ছে না উন্নত দেশগুলোর। তারা নিজেরা নিজেরা মজুত করেই চলেছে টিকা। এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আহ্বানও এক্ষেত্রে কোনো কাজে আসছে না।
বিশ্বের ধনী দেশগুলোর কাছে মজুত আছে ১২০ কোটি ডোজ অতিরিক্ত টিকা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আহ্বানের পরও এসব টিকার বড় অংশই অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশগুলোতে অনুদান দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই তাদের।
মেয়াদ শেষ হওয়ায় বহু টিকা এরইমধ্যে ফেলে দিতেও দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশকে। যা নিয়ে চলছে তীব্র সমালোচনা ।
নতুন এক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, এই বছরের শেষ নাগাদ ধনী দেশগুলোর কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত টিকা থাকবে প্রায় ১২০ কোটি ডোজ। এসব টিকার বড় অংশই অপেক্ষাকৃত গরিব দেশগুলোতে অনুদান দেওয়ারও কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।
তথ্য বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান এয়ারফিনিটি’র নতুন জরিপে দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে টিকা রয়েছে প্রায় ৫০ কোটি ডোজ। এরমধ্যে ৩৬ কোটি ডোজ টিকা কোথাও অনুদান দেওয়ার পরিকল্পনা তাদের নেই। এ বছরের শেষ নাগাদ এসব দেশের কাছে মজুত থাকবে ১২০ কোটি ডোজ টিকা। এরমধ্যে ১০৬ কোটি ডোজই অনুদানের পরিকল্পনা তাদের নেই।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেয়াসিস বলেছেন, বিশ্বজুড়ে ৫০০ কোটির বেশি ডোজ টিকা প্রয়োগ হয়েছে। এর ৭৫ শতাংশই হয়েছে মাত্র ১০টি দেশে। আফ্রিকায় মাত্র দুই শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া গেছে বলেও জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মানি, জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশ টিকার মজুতে শীর্ষে। বিশ্বের বহু প্রখ্যাত স্বাস্থ্য সংস্থা ও কর্মকর্তা বিশ্বজুড়ে টিকা বৈষম্য নিয়ে সমালোচনা করেছেন। এই বৈষম্য নিরসনে জাতিসংঘের উদ্যোগে টিকা বণ্টন উদ্যোগ কোভ্যাক্স যাত্রা করে।
প্রাথমিকভাবে এই উদ্যোগের লক্ষ্য ছিল এই বছরের শেষ নাগাদ ১৯০টি দেশে দুইশ কোটির বেশি ডোজ টিকা সরবরাহ। এর মাধ্যমে বিশ্বের অন্তত ২০ শতাংশ মানুষের জন্য টিকা প্রাপ্তির লক্ষ্য ছিল তাদের। তবে ধনী দেশগুলো নিজেরাই টিকা উৎপাদকদের সঙ্গে চুক্তি করতে থাকায় কোভ্যাক্স টিকা কম পায়। এরপর ধনী দেশগুলো টিকা মজুতও জারি রেখেছে।