শীতের প্রকোপে শিশুদের ডায়রিয়া রোগ বাড়ছে। শীতে সক্রিয় হওয়া রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এ কারণে প্রতিদিন প্রায় ৬০০ শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীতে আইসিডিডিআরবিতে (ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ) ভর্তি হচ্ছে। অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় ২৫ জন শিশু চিকিৎসা নিতে আসছে। আইসিডিডিআরবি কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে। বুধবার আইসিডিডিআরবিতে সরেজমিন দেখা যায়, ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যাই বেশি। কল্যাণপুরের বাসিন্দা আসমা আক্তার তার সাত মাসের শিশু সন্তানকে আইসিডিডিআরবিতে ভর্তি করিয়েছেন। গত তিন দিন ধরে তার সন্তানের ডায়রিয়া। এরপর তাকে এ হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন। আসমা আক্তার বলেন, হঠাৎ করে ঠান্ডা বেড়ে যাওয়ায় আমার সন্তানের অতিমাত্রায় ডায়রিয়া দেখা দেয়। এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। গত তিন দিনের চিকিৎসায় বর্তমানে আগের চেয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছে। তার সন্তানকে আরও তিন-চার দিন ভর্তি রাখতে চিকিৎসক পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান তিনি। পাশের বেডে রীনা বেগম তার ৫ মাসের সন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন। দুই-তিন দিন ধরে তার সন্তানের পাতলা পায়খানা হচ্ছিল। গত মঙ্গলবার থেকে তা বারবার হতে থাকে। এমন পরিস্থিতি দেখা দেয়ায় গত মঙ্গলবার মাঝরাতে আইসিডিডিআরবিতে ভর্তি করান। বর্তমানে তার শরীরে স্যালাইন দিয়ে হাসপাতালের বেডে শুইয়ে রাখা হয়েছে। গত চারদিন থেকে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৪ বছরের শিশু তাহসীন। তার মা নিপা জানান, ২১ ডিসেম্বর থেকেই পানির মতো পাতলা পায়খানা হতে থাকে। অবস্থার আরও অবনতি হলে ২২ ডিসেম্বর দুপুর ৩টায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাহসীনকে। টানা তিনটি স্যালাইন দিতে হয় তাকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আইসিডিডিআরবিতে স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৫০ জন রোগী ভর্তি হলেও গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ৫৫০ থেকে ৬০০ জন ডায়ারিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছে। তাদের মধ্যে ৯০ শতাংশই শিশু। শৈতপ্রবাহে শীত বেড়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আইসিডিডিআরবির চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. আজহারুল ইসলাম খান গতকাল বুধবার বলেন, শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় শিশুদের ডায়রিয়া বাড়ছে। শীতের কারণে শিশুরা রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় তাদের ডায়রিয়া রোগ দেখা দিচ্ছে। এ কারণে হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, ৫৫ শতাংশই রোটা ভাইরাসের সংক্রমণে অসুস্থ হচ্ছে। ৫ বছরের কম বয়সী শিশুরা এখন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।