শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:১৫ অপরাহ্ন

সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায় ৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৯
  • ১৭ Time View

আবহাওয়া অধিদপ্তর যে পূর্বাভাস দিয়েছিল, তার আগেই দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বইতে শুরু করেছে আরেকটি শৈত্যপ্রবাহ, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় থার্মোমিটারের পারদ নেমেছে ৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ এবং টাঙ্গাইল ও কুষ্টিয়া জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার থেকে দুদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে ঢাকা খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রামে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। তাতে তাপমাত্রা আরেকটু কমতে পারে। শৈত্যপ্রবাহ মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রা পেতে পারে। গতকাল বুধবার সকাল ৯টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়, ৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটাই এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আর ঢাকায় ওই সময় থার্মোমিটারের পারদ ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। গত মঙ্গলবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছিল। এবার পৌষের চতুর্থ দিনেই মৌসুমের প্রথম শৈত্যপ্রবাহের দেখা পায় বাংলাদেশ। ১৯  চুয়াডাঙ্গায় পারদ নামে ৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা তখন ছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে আসায় এবং দিনভর কুয়াশায় সূর্যের দেখা না মেলায় শীতের তীব্রতা বেড়ে যায়। তীব্র শীতে দুর্ভোগে পড়ে খেটেখাওয়া মানুষ, বৃদ্ধ ও শিশুরা। ২২ ডিসেম্বর থেকে তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করে। সোম ও গত মঙ্গলবার সূর্যের হাসি শীতার্ত মানুষের মনে এনে দেয় খানিকটা স্বস্তি| আবহাওয়াবিদরা আভাস দিয়েছিলেন, ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বরহালকা বৃষ্টির পর ২৮ তারিখ থেকে আরেকটি শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে। কিন্তু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হল তার আগেই। শীতের মধ্যে ঘন কুয়াশায় ফেরি পারাপারে সমস্যা হয়েছে রাতে ও ভোরে। আর শীতজনিত রোগ নিয়ে দেশের হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ চলছে গত এক সপ্তাহ ধরেই। আবহাওয়া পরিবর্তনের ব্‌বিষয়টি মাথায় রেখে কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকদের জরুরি বার্তা দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ঘন কুয়াশা ও শীতের সময়ে রাতে বীজতলা স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। তীব্র শীতে থ্রিপস পোকার আক্রমণ, চারা পোড়া ও ঝলসানো রোগের প্রকোপ থেকে কীভাবে বীজতলা বাঁচানো যাবে, সেই নির্দেশনাও রয়েছে ওই বার্তায়। কৃষি বিভাগ বলেছে, জমিতে থ্রিপস পোকার আক্রমণ হলে ইউরিয়া সার ব্যবহার করতে হবে। আক্রমণ বেশি হলে ম্যালাথিয়ন, আইসোপ্রোকার্ব, কার্বালিক, ক্লোরোপাইরিফস গ্রুপের অনুমোদিত কীটনাশক অনুমোদিত মাত্রায় ব্যবহার করা যেতে পারে। আর চারা পোড়া বা ঝলসানো রোগ দেখা দিলে বীজতলায় পানি ধরে রাখতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলিলিটার হারে আজোক্সিস্ট্রাবিন বা পাইরোকোস্ট্রাবিন জাতীয় ছত্রাকনাশক মিশিয়ে দুপুরের পরে বীজতলায় স্প্রে করতে হবে। এদিকে উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে বিকেল থেকে ভোর পর্যন্ত ঘন কুয়াশা আর উত্তরীয় হিমেল হাওয়া শীতের তীব্রতা কিছুতেই কমছে না। একইসঙ্গে দিনের বেলা ঘন কুয়াশায় সূর্যের লুকোচুরি খেলায় বাড়ছে জনদুর্ভোগ। গতকাল বুধবার ৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কুড়িগ্রামের রাজরাহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে হিমালয় পাদদেশীয় এই অঞ্চলে শীতের তীব্রতা বিরাজ করায় জনজীবনে দুর্ভোগ নেমেছে, বিপাকে পড়েছে দিনমজুর ও ছিন্নমূল মানুষ। কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় মানুষের পাশাপাশি দুর্ভোগ বেড়েছে গবাদিপশুপাখির। প্রথম দফায় মৃদু শৈতপ্রবাহে কুড়িগ্রাম জেলার সহস্রাধিক খামারে শীতের তীব্রতায় প্রায় দেড় শতাধিক মুরগির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে খামারিরা। অপরদিকে তীব্র শীতে আলুক্ষেত ও বোরো বীজতলায় লেট ব্লাইট রোগের প্রার্দুভাবের শংকায় চাষিরা।

কুয়াশা ও তীব্র শীত থেকে রেহাই পেতে খামারিদের মুরগি রাখার স্থানে চারদিকে পর্দা দিয়ে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত ঢেকে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) শাহিনুর রহমান সরদার জানান, গতকাল বুধবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ২১৬ জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছে। এরমধ্যে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ১০ শিশু এবং ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ২৬ জন ভর্তি হয়েছে। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ২৬ জনের মধ্যে ২৩ জনই শিশু। রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, গতকাল বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুই/তিনদিনের মধ্যে তাপমাত্রা স্বাভাবিক হতে পারে। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন জানান, শীতার্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য ৫৯ হাজার ১৪ পিস কম্বল পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত নয়টি উপজেলায় শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় ৫৬ হাজার ৫১৪ পিস কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও এক হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 Jagoroni TV
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com